তাবলিগ জামাতের বিবদমান দুই পক্ষ এবারও আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করবে। সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত দুই পক্ষের সঙ্গে সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী জানুয়ারি মাসে দুই পক্ষ তিন দিন করে পৃথক এই ইজতেমার আয়োজন করবে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাবলিগের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরোধী হিসেবে পরিচিত মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা আগামী ১০ থেকে ১২ জানুয়ারি এবং সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি পৃথকভাবে ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা পালন করবেন। তবে কোনো পক্ষই ইজতেমার আগে পাঁচ দিনের জোড় (ইজতেমার প্রস্তুতিমূলক সমাবেশ) টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে করতে পারবে না। নিজেদের ব্যবস্থাপনায় তারা এই আয়োজন ময়দানের বাইরে করবে।
প্রথম আলো ফাইল ছবিপ্রথম আলো ফাইল ছবিতাবলিগ জামাতের বিবদমান দুই পক্ষ এবারও আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করবে। আজ সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত দুই পক্ষের সঙ্গে সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী জানুয়ারি মাসে দুই পক্ষ তিন দিন করে পৃথক এই ইজতেমার আয়োজন করবে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাবলিগের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরোধী হিসেবে পরিচিত মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা আগামী ১০ থেকে ১২ জানুয়ারি এবং সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি পৃথকভাবে ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা পালন করবেন। তবে কোনো পক্ষই ইজতেমার আগে পাঁচ দিনের জোড় (ইজতেমার প্রস্তুতিমূলক সমাবেশ) টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে করতে পারবে না। নিজেদের ব্যবস্থাপনায় তারা এই আয়োজন ময়দানের বাইরে করবে।
বাংলাদেশে ১৯৬৩ সাল থেকে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আগামী জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইজতেমা হবে ৫৭তম। ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইজতেমা তিন দিন ধরে অনুষ্ঠিত হতো। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মুসল্লিরা এই ইজতেমায় অংশ নেন বলে এটি বিশ্ব ইজতেমা হিসেবে পরিচিতি পায়। মুসল্লিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ২০১০ সাল থেকে দুই দফায় তিন দিন করে ইজতেমার আয়োজন করা হতো। কিন্তু বিরোধের কারণে গত বছর থেকে আলাদাভাবে দুই পক্ষ তিন দিন ধরে ইজতেমার আয়োজন করা শুরু করে। এর প্রভাব পড়ে মুসল্লিদের ওপরও। বিদেশ থেকে আসা মুসল্লিদের সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ার হোসেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব আনিসুর রহমান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী ও তাবলিগের বিবদমান দুই পক্ষের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, দুই পক্ষের সম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাঁরা সিদ্ধান্ত মেনেই ইজতেমার আয়োজন করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
দিল্লি ও লাহোরের নেতৃত্বের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে বিভক্ত হয়ে পড়ে তাবলিগ জামাত। তাবলিগের বর্তমান আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভী দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দ্বন্দ্বের শুরু। ২০১৫ সালের নভেম্বরে পাকিস্তানের লাহোরের রাইবেন্ডে ইজতেমা চলার সময় সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১৩ সদস্যের একটি ‘আলমি শুরা’ গঠনের প্রস্তাব আসে। সাদ সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তারপরও ইজতেমা শেষে রাইবেন্ড থেকে শুরা বোর্ড গঠনের একটি চিঠি বিভিন্ন দেশে তাবলিগের দায়িত্বশীলদের কাছে পাঠানো হয়। এরপর এক পক্ষ সাদের সিদ্ধান্তের পক্ষে এবং আরেক পক্ষ আলমি শুরা গঠনের পক্ষে অবস্থান নেয়।
মাওলানা সাদকে নিয়ে বাংলাদেশে বিভেদ প্রকাশ্যে দেখা দেয় ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে। তাবলিগ জামাতের যে অংশটি সাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তাদের সঙ্গে যোগ দেয় কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। প্রবল বিরোধিতার কারণে ওই বছর বাংলাদেশে এসেও ইজতেমায় অংশ নিতে পারেননি সাদ। এরপর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলেই আসছে। ইজতেমায় আধিপত্য নিয়ে গত বছরের ১ ডিসেম্বর টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে এক মুসল্লি নিহত হন।