ওসি মোয়াজ্জেমের ৮ বছর জেল, ১০ লাখ টাকা জরিমানা

0
195
(বামে ) সাজাপ্রাপ্ত ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন (ডানে ) ভুক্তভোগী মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি । ফাইল ছবি

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার মামলায় ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে আট বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এই রায় দেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুটি ধারায় এ রায় ঘোষণা করেন আদালত। ২৬ ধারায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। ২৯ ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

মামলার বাদী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সাইদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভুক্তভোগী নুসরাত জাহানের ভিডিও ছেড়ে দিয়ে সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম যে অপরাধ করেছিলেন, সেটি আজ আদালতের রায়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

অপরদিকে ওসি মোয়াজ্জেমের আইনজীবী ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন, তাঁর মক্কেল ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন তাঁরা। ২০ নভেম্বর এই মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হলে আদালত রায়ের জন্য আজ তারিখ ধার্য করেন।

উল্লেখ্য , ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতের ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়। সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গত ২৭ মে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। আদালত তা আমলে নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেন। এর ২০ দিনের মাথায় গত ১৬ জুন মোয়াজ্জেম হাইকোর্ট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।

এর পর গত ৬ এপ্রিল নুসরাত জাহানকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেন তাঁর মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। ১০ এপ্রিল সে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

এর ১০ দিন আগে নুসরাত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সে সময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে ছড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ আনা হয় মামলায়।

অপরদিকে নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় গত ২৪ অক্টোবর ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

LEAVE A REPLY